উত্তরের হিমেল হাওয়ায় ভেসে শীত চলে এসেছে। সেই সাথে আসতে শুরু করেছে বিভিন্ন প্রজাতির অতিথি পাখি। শীতকালে সাইবেরিয়া সহ বিশ্বের বিভিন্ন অঞ্চলে প্রচুর তুষার পাত হয়। এসময় এসব অঞ্চলে পাখিদের টিকে থাকা অসম্ভব হয়ে পড়ে। তীব্র খাদ্য সংকট তৈরি হয়। ফলে পাখিরা প্রাণ বাঁচাতে হাজার হাজার মাইল পথ পাড়ি দিয়ে বাংলাদেশ সহ নাতিশীতোষ্ণ দেশ বা অঞ্চলে আশ্রয় গ্রহণ করে।
বিশেষ করে অক্টোবরের শেষ এবং নভেম্বরের শুরুতে এসব পাখিরা আমাদের দেশে আসতে শুরু করে। বিল-ঝিল গুলো পাখিদের কলকাকলীতে মুখরিত হয়ে উঠে। ডাহুক, তীরশুল, নলকাক, ভাড়ই, রাংগাবনী, গাংচিল, রাতচড়া, হুটটিটি, হারগিলা, বালিহাঁস, সরালি কাস্তে,হুরহুর সহ বিভিন্ন প্রজাতির অতিথি পাখি বাংলাদেশে আসে।
কিছু অসাধু মানুষ প্রতিবছর এই অতিথি পাখি শিকার করে থাকে। বন্দুক, বিষটোপ,জাল ও বিভিন্ন ধরনের ফাঁদ পেতে পাখি শিকার শুরু করে। অনেকে এটাকে পেশা হিসেবে বেছে নেয়। বিশেষ করে ভোর এবং রাতের বেলা পাখি শিকার করা হয়। মানুষের বিরূপ আচরণের শিকার হয়ে সপ্তদশ শতক থেকে এখন পর্যন্ত প্রায় ১৩০ প্রজাতির পাখি চিরতরে হারিয়ে গেছে। তাই অতিথি পাখি শিকার বন্ধ করতে হবে। তা নাহলে জীববৈচিত্র্য হুমকির মুখে পড়বে।
আরও পড়ুনঃ বিশ্ববিদ্যালয় হোক শিক্ষা ও গবেষণা সমৃদ্ধ প্রতিষ্ঠান
১৯৭৪ সালের বণ্যপ্রাণী রক্ষা আইন এবং ২০১২ সালের বণ্যপ্রাণী সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা আইনে বলা হয়েছে পাখি নিধনের সর্বোচ্চ শাস্তি এক বছরের জেল, এক লাখ টাকা জরিমানা বা উভয় দন্ড। কিন্তু নির্মম সত্যি হলো এসব আইনের প্রয়োগ দেখা যায় না। যার ফলশ্রুতিতে পাখি শিকার বন্ধ হচ্ছে না। প্রশাসনের উচিত পাখি শিকার বন্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া এবং প্রচলিত আইনের সঠিক প্রয়োগ করা।জনসাধারণের সচেতনতা ব্যাতিত পাখি শিকার বন্ধ করা অসম্ভব। তাই আমাদের সবাইকে সচেতন হতে হবে,পাখি শিকারীদের প্রশাসনের হাতে তুলে দিতে হবে। তাহলেই হয়তো আর কোন প্রজাতির পাখি বিলুপ্ত হবে না এবং তারা প্রকৃতির শোভাবর্ধন করবে।
শিক্ষার্থী, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়, কুষ্টিয়া